নওগাঁ বালুডাংগা বাস টার্মিনাল হতে সরাসরি বাসযোগে ঐতিহাসিক পাহাড়পুরে যাওয়া যায় |আনুমানিক দূরত্ব আনুমানিক ৩২ কিঃমিঃ বাসভাড়া- ৩০- ৪০ টাকা
১) পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার বা সোমপুর বিহার:
বদলগাছী উপজেলা তথা নওগাঁ জেলার সর্বাপেক্ষা গৌরবময় দর্শনীয় স্থান হলো সোমপুর বিহার বা পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার। বর্তমান পাহাড়পুর ইউনিয়ন পরিষদের অর্ন্তগত পাহাড়পুর গ্রামে পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার অবস্থিত। পাহাড়পুর নামটি আধুনিক এর প্রাচীন নাম সোমপুর। বাংলাদেশে সপ্তম শতাব্দিতে (৭৭০-৮১০ খ্রি:) বৌদ্ধ ধর্মীয় পাল রাজ বংশের প্রতিষ্ঠা হয়। খ্রীষ্টিয় অষ্টম ও নবম শতাব্দিতে পাল বংশের দ্বিতীয় ও তৃতীয় রাজা ধর্মপাল ও তার পুত্র দেবপাল বাংলা, বিহার এবং কনৌজ পর্যন্ত বিরাট সম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। বৌদ্ধ ধর্মের চরম উৎকর্ষতার যুগেতাদেরই পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশে এই পাহাড়পুর বিহার ও মন্দির গড়ে ওঠে। ঐতিহাসিক ও ভৌগলিক কারণে এই মহাবিহারটি ধ্বংসস্তুপে পরিনত হলেও আজও এই অপূর্ব বিহারটি এশিয়ার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ বৌদ্ধ বিহার বলে সগৌরবে দন্ডায়মান।
পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের জন্য ১৭৭ টি কক্ষ ছিল। মোট ৭০.৩১ একর জমির উপর পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার অবস্থিত। বর্তমানে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ এখানে একটি যাদুঘর, একটি রেষ্ট হাউজ ও কয়েকটি প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ করেছে। ১৯৩৪ খ্রি: পর্যন্ত খননের ফলে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ এই বিহারের পূর্ব দিকে সত্যপিরের ভিটা ও মন্দিরের চর্তুদিক বেষ্টীত কক্ষগুলো ও সমগ্র প্রত্নাবশেষটি আবিস্কার করেন। এর মধ্যভাগে প্রধান বিহার এবং তাকে ঘিরে ১৯৮টি বাসপযোগি কক্ষ, বিস্তৃত প্রবেশ পথ, অসংখ্য বিনোদনস্তুপ, ছোট ছোট মন্দির, পুষ্করিণী অবস্থিত। মন্দিরটি উত্তর-দক্ষিণে দৈঘ্য ৩৫৭ ফুট প্রস্থে পূর্ব-পশ্চিমে ৩১৪ ফুট। মূল বিহারটি এর মধ্যস্থলে অবস্থিত। সন্ধ্যাবর্তী এখানকার রাজার কণ্যা ছিলেন। আকর্ষনীয় স্থাপত্য বিশাল আয়তন ও ঐতিহাসিক গুরুত্বের জন্য পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার আজ বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন সংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসাবে স্বীকৃত। সম্প্রতি এটি ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকা ভূক্ত হয়েছে।
ঐ পাহাড়পুরের প্রস্তর গ্রাত্রে ৬৩টি মুর্তি দেখা যায়। মন্দির গ্রাত্রেও বহু জীব-জন্তুর মুর্তি পাওয়া যায়। মূল ভূমি থেকে বিহারটির উচু প্রায় ৭২ ফুট। পাহাড়পুরকে প্রাচীন নালন্দা বিশ্ব বিদ্যালয়ের মিনি সংস্করণ হিসেবে চিহিত করা যায়। প্রতি বছর এখানে বহু দেশী-বিদেশী পর্যটক ও সাধারণ মানুষের সমাগম হয়।
২) হলুদ বিহারঃ হলুদ বিহার ক্ষুদ্রাকৃর্তির একটি বৌদ্ধ বিহার। বদলগাছী উপজেলার বিলাশবাড়ী ইউনিয়নের দ্বীপগঞ্জ গ্রামে হলুদ বিহার অবস্থিত। পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার হতে মাত্র ১৪কিঃমিঃ দক্ষিনে এ বিহারটি অবস্থিত। এই বিহারটি পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের সম-সাময়িক কালের বলে ঐতিহাসিকগন মনে করেন্। মূল ভূমি হতে এর উচ্চতা ২৫ ফুট।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস